আশাশুনি প্রতিনিধি॥ আশাশুনি উপজেলার আনুলিয়া ইউনিয়নে ৫ আগস্ট পরবর্তী দোকান, মৎস্য ঘের, বাড়িতে লুটপাট ও চুরির ঘটনা ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করতে মিথ্যাচার ও প্রোপাগান্ডার বিরুদ্ধে নিজেদের অবস্থান পরিষ্কার করে বক্তব্য দিয়েছেন ক্ষতিগ্রস্ত ৮ ব্যক্তি।
৫ আগষ্ট পরবর্তী সময়ে উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় দখল, লুটপাটের ঘটনা নিয়ে পত্র পত্রিকা ও সোস্যাল মিডিয়ায় একাধিক খবর প্রকাশিত হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্তরা অনেকেই থানাপুলিশ-আদালতে অভিযোগ ও মামলা দায়ের করেছেন। কয়েকটি ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে দাঁড়ানোর আশ্বাস দিয়ে তাদের অসহায়ত্বের সুযোগ নিয়ে নিজেদের রাজনৈতিক ফায়দা হাসিলের চেষ্টা করা হয়েছে বলে অভিমত ব্যক্ত করেছেন খোদ ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিরা। যাদের উদ্ধৃতি দিয়ে আনুলিয়া ইউপি চেয়ারম্যান রুহুল কুদ্দুস ও তার ভাই কেন্দ্রীয় কৃষক দল নেতা আমিনুর রহমান মিনুকে নিয়ে ঘের দখল, লুটপাট ও চাঁদাবাজির অভিযোগে পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে এদের মধ্যে কমপক্ষে ৮ ব্যক্তি তাদের অভিমত ব্যক্ত করে বলেছেন, আমরা ক্ষতিগ্রস্ত, অথচ সাংবাদিক আমাদের সাথে যোগাযোগ না করে অন্যের কাছে শুনে নিজেদের মনগড়া কথা প্রকাশ করে আমাদের না হোক অন্যের উপকার করার চেষ্টা করেছেন।
আনুলিয়া ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান আলমগীর আলম লিটনের পিতা বীর মুক্তিযোদ্ধা রশিদুল আলম জানান, ৫ থেকে ১৪ আগষ্ট পর্যন্ত বিছট গ্রামের সিদ্দিক, শওকত হোসেন, রাঙ্গা, জামাল ও তার ছেলেরা মিলে ৩০/৩৫ জনের একটি দল আমার গরুর খামার লুট করে। খামারে ১৭ টি জার্সি গরু, ৪৭ টি ছাগল, দুম্বা ও গয়াল ধরে নিয়ে গেছে। তারা আমার ৩০০ বিঘা জমির মাছের ঘের কেড়ে নিয়েছে। ৩০ বিঘা জমির ধান গতবছর কেটে নিয়ে গেছে। যাদের কাছে জমি বর্গা দিয়েছি তাদের কাছেও বিঘা প্রতি ৫০০০ টাকা চাঁদা দিতে হয়েছে। সিদ্দিক এর লোকজন গত এক বছর ধরে আমাকে মসজিদে নামাজ আদায় করতে দেয় না। কুদ্দুস চেয়ারম্যান অনেক চেষ্টা করেও তাদের নিবৃত করতে ব্যর্থ হয়েছেন। তাকে রাজনৈতিক ভাবে হেয় প্রতিপন্ন করতে প্রতিপক্ষের লোকজন কুৎসা রটনা করে যাচ্ছে। একসরা গ্রামের কাপড় ব্যবসায়ী নয়ন গাজী বলেন, গত ৫ আগষ্ট বিচ্ছিন্ন কিছু ঘটনা ঘটেছে এটা সত্য তবে এতে কুদ্দুস চেয়ারম্যানের কোন হাত নেই। আমার বিনা অনুমতিতে কোন সাংবাদিক কিভাবে আমার নাম ব্যবহার করে সংবাদ প্রচার করতে পারে বুঝি না। বিছট বাজারের ব্যবসায়ী আব্দুস সালাম জানান, আমার দোকানে কোন ভাংচুরের ঘটনা ঘটেনি। কুদ্দুস চেয়ারম্যান এর নামে মিথ্যা প্রোপাগান্ডা ছড়ানো হচ্ছে। দঃ একসরা গ্রামের আব্দুল সানার ছেলে আকবর সানা জানান, ৬ আগস্ট রাতে আ্মার দোকান থেকে ৬ টি স্যালো মেশিন নিয়ে যায়। বিষয়টি আমি ইউপি চেয়ারম্যান রুহুল কুদ্দুছকে জানালে তিনি দ্রুত ব্যবস্থা নিয়ে মেশিনগুলো উদ্ধার করতে সক্ষম হন। এ ঘটনায় রঙ মাখিয়ে চেয়ারম্যান ও চেয়ারম্যানের ভাই মিনুকে জড়িয়ে ৬ কে ২৬ বানিয়ে সোস্যাল মিডিয়া ও গণমাধ্যমে মিথ্যা ও ভিত্তিহীন প্রচারনা করা হয়েছে। তথ্য পড়ে আমি হতবাক হয়ে গেছি। অথচ তথ্য সংগ্রহকারী আমার কাছে কোন যোগাযোগ করার প্রয়োজন মনে করেননি।প্রতাপনগর ইউনিয়নের গোকুলনগর গ্রামের হাজী সুজাউদ্দীনের ছেলে ইউনুছ আলী গাজী জানান, চেয়ারম্যান রুহুল কুদ্দুস ও তার ভাই কেন্দ্রীয় কৃষক দল নেতা আমিনুর রহমান মিনুকে জড়িয়ে আমার ১২ বিঘা জমির মৎস্য ঘের লুটপাটের প্রকাশিত তথ্য ভিত্তিহীন। আমি আমার ঘেরে দখলে আছি ও মাছ চাষ করে আসছি। কোন দখল বা লুটপাটের ঘটনা ঘটেনি। বিছট গ্রামের মৃত সবুর সরদারের ছেলে শাহিনুর জানান, বাজারে আমার মোবাইলের শো রুম আছে। ৫ আগস্ট পরবর্তী সময়ে যেসব মালামাল লুট হয়ে গিয়েছিল চেয়ারম্যান সাহেব যথাসাধ্য চেষ্টা করে সেগুলো উদ্ধারে সহযোগিতা করেছেন।আমার সাথে যোগাযোগ না করে আমার উদ্ধৃতি দিয়ে মিথ্যা প্রচারনা উচিত হয়নি। দঃ একসরা গ্রামের সাবেক ইউপি সদস্য রফিকুল ইসলাম জানান, ৫ আগস্ট পরবর্তীতে আমার কোন ঘের লুটপাট ও ক্ষয়ক্ষতি হয়নি। আমি অসুস্থ হওয়ায় কিছুদিন বাইরে ছিলাম। চেয়ারম্যান সাহেব আমাকে ডেকে বাড়িতে নিয়ে এসেছেন। আমার উদ্ধৃতি দিয়ে যে মনগড়া প্রচারনার আমি তার নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই। একই গ্রামের আলহাজ্ব সুন্দর আলী গাজীর ছেলে সাহেব আলী জানান, ৬ আগস্ট রাতে কে বা কারা আমার ৩টি গরু চুরি করে নিয়ে যায়। বিষয়টি চেয়ারম্যান সাহেবকে জানালে তিনি গরু উদ্ধারে আপ্রাণ চেষ্টা চালান। বিবৃতিদাতারা বলেন, আমরা ক্ষতিগ্রস্ত অথচ আমাদের অনুমতি ও বক্তব্য ছাড়াই সোস্যাল মিডিয়ায় মিথ্যা এবং প্রকৃত ঘটনার পাশ কাটিয়ে রাজনৈতিক ফায়দা হাসিলের জন্য মনগড়া ব্যাখ্যা দেওয়া হয়েছে। আমরা এলাকায় শান্তি পূর্ণ সহাবস্থানে আছি। বিবৃতিদাতারা এসব নিয়ে রাজনীতি না করার আহ্বান জানিয়েছেন।