ডেস্ক রিপোর্ট ॥ সীমান্তে কড়াকড়ি আরোপের পর অবৈধ অভিবাসী ও রাজনৈতিক আশ্রয় প্রার্থীদের নিজ দেশে বিশেষ ফ্লাইটে ফেরত পাঠানো শুরম্ন করল জার্মানি। শুক্রবার (১৮ জুলাই) লাইপিজ থেকে এই বিশেষ ফ্লাইটে ৮১ জন আফগান নাগরিককে কাবুলে ফেরত পাঠানো হয়েছে। এ সময় ইউরোপে কারা থাকবে আর কারা থাকবে না, তা একাšত্মই ইউরোপীয় রাষ্ট্রের সিদ্ধাšত্ম বলেও মšত্মব্য করেন জার্মান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আলেকজান্ডার ডব্রিন্ডট। তিনি বলেছেন, অবৈধ অভিবাসন রম্নখতে এখন থেকে নেতৃত্ব দেবে জার্মানি। এ ছাড়া শুক্রবার অভিবাসন ইস্যুতে ইউরোপজুড়ে কঠোর অবস্থান নিতে জার্মানির নেতৃত্বে ছয় দেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী একমত হয়েছেন। জার্মান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আলেকজান্ডার ডব্রিন্ডট বলেছেন, অবৈধ অভিবাসন ঠেকাতে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সদস্যদের ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে। কে ইউরোপে আসবে, তা মানবপাচারকারীরা নয়, আমরাই ঠিক করব। জার্মানির সর্বোচ্চ শৃঙ্গ জুগস্পিটজে পর্বতে অনুষ্ঠিত অভিবাসন শীর্ষ সম্মেলনে শুক্রবার তিনি এ মšত্মব্য করেন। সম্মেলন চলাকালেই ৮১ জন আফগান নাগরিককে বিশেষ ফ্লাইটে কাবুলে ফেরত পাঠানো হয়। এর মাধ্যমে নতুন অভিবাসীদের কঠোর বার্তাও দেওয়া হলো বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। ইউরোপীয় অভিবাসন সম্মেলনে জার্মানির আমন্ত্রণে অংশ নেন ফ্রান্স, পোল্যান্ড, ডেনমার্ক, চেক প্রজাতন্ত্র ও অস্ট্রিয়ার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীরা। সম্মেলনে আলেকজান্ডার ডব্রিন্ডট বলেন, আমাদের এই সম্মেলন এক ধরনের প্রতীকী বার্তা। এখানে বোঝানো হয়েছে যে, ইউরোপ একসাথে দাঁড়াচ্ছে, সংকল্পবদ্ধ হচ্ছে অবৈধ অভিবাসনের বিরম্নদ্ধে। অদূর ভবিষ্যতে ইউরোপে আশ্রয়প্রার্থীদের ইউরোপের বাইরে কেন্দ্র স্থাপন করে সেখানেই আবেদন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হবে। এমন পরিকল্পনা দ্রম্নতই বা¯ত্মবায়ন করতে সম্মেলনে অংশ নেওয়া স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীরা সম্মত হয়েছেন। এ বিষয়ে জার্মান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ইউরোপের সুরড়্গা মানেই আবেদনকারীকে ইউরোপের মাটিতে থাকতে হবে এমন কোনো বাধ্যবাধকতা নেই। বৈঠকে সিরিয়া ও আফগানি¯ত্মানের নাগরিকদের আইনি প্রক্রিয়া শেষে দ্রম্নত প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া শুরম্ন করার পড়্গওে মত দেন ইউরোপীয় দেশগুলোর স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীরা। আলেকজান্ডার ডব্রিন্ডট বলেন, এই দুই দেশের নাগরিক যারা যুদ্ধের কারণে ইউরোপে আশ্রয় নিয়েছিল, তাদের এখন নিজ দেশে ফিরিয়ে দেওয়ার মতো পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। ইতোমধ্যে জার্মানি সকালে ৮১ জনকে পাঠিয়ে তা শুরম্ন করল। জার্মান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আরও বলেন, ইউরোপকে এখন দ্রম্নত সিদ্ধাšত্ম নিতে হবে, দ্রম্নত আবেদন নিষ্পত্তি করতে হবে এবং অবৈধ অভিবাসনের বিরম্নদ্ধে কঠোর পদড়্গপে নিতে হবে। তা না হলে সামাজিক চাপ আরও বাড়বে, সমাজে বিভাজন আরও তীব্র হবে। ফরাসি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ব্রম্ননো রেতাইয়ো বলেন, ইউরোপের সীমাšেত্ম অনিয়মিত অভিবাসন ঠেকানো ছাড়া এই সমস্যার সমাধান নেই। আমরা সবাই একইভাবে উদ্বিগ্ন। অতিরিক্ত অবৈধ অভিবাসন হলে ইউরোপীয় সমাজের উচ্চমান বজায় রাখা কঠিন হয়ে পড়বে বলেও মšত্মব্য করেন তিনি। পোল্যান্ডের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী টমাস সিয়েমনিয়াক জানান, বেলারম্নশ সীমাšেত্ম তার দেশ কড়া নজরদারি চালাচ্ছে। বাল্টিক অঞ্চল দিয়ে নতুন রম্নটে পাচারের চেষ্টা হচ্ছে, সেটাও বন্ধ করতে হবে। অস্ট্রিয়ার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী গেরহার্ড কার্নারও জার্মান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আলেকজান্ডার ডব্রিন্ডটের অবস্থানকে সমর্থন করে বলেন, যত বিতর্কই থাকুক, আফগানি¯ত্মানের মতো দেশেও ফেরত পাঠানো উচিত। তবে জার্মান স্বরাষ্ট্র আলেকজান্ডার ডব্রিন্ডটের কড়া অবস্থানের সমালোচনা করেছেন জার্মান সরকারের শরণার্থী বিষয়ক কমিশনার ও চ্যান্সেলর দপ্তরের প্রতিমন্ত্রী নাটালি পাওলিক। তিনি বলেন, আমরা পরিকল্পিত ও সুশৃঙ্খল অভিবাসন চাই। কিন্তু এভাবে কেবল প্রতিরোধের দিকে গেলে সেটা হবে একধরনের ‘মাইগ্রেশন প্রিভেনশন টার্বো’। আমাদের দরকার একটি আধুনিক, মানবিক অভিবাসন নীতি।