শোকে স্তব্ধ যশোরের নওয়াপাড়া ইউনিয়নের পাশাপাশি তিন গ্রাম – দৈনিক সাতক্ষীরা সংবাদ

শোকে স্তব্ধ যশোরের নওয়াপাড়া ইউনিয়নের পাশাপাশি তিন গ্রাম

লেখক/প্রতিবেদকঃ SatkhiraSangbad
প্রকাশঃ জুন ২৮, ২০২৫

যশোর অফিস ॥ শোকে স্তব্ধ যশোর সদরের নওয়াপাড়া ইউনিয়নরে পাশাপাশি ৩ গ্রাম। এক মর্মান্তিক সড়ক দূর্ঘটনায় এই ৩ গ্রামের ৬ জন নিহত ও ১২ জনের বেশী আহত হয়ে মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছেন। নিহতের পরিবারে চলছে শোকের মাতম। কোন শান্তনাবানীই তাদের কাঁন্না থামাতে পারছে না। ঢাকার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে চরমোনায় পীরের দল ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মহাসমাবেশে যোগ দিতে দলের নেতাকর্মীরা গত শুক্রবার দিনগত রাতে বাস রিজার্ভ করে যশোর থেকে রওনা হন। যাওয়ার পথে শনিবার ভোররাতে হামদান এক্সপ্রেস পরিবহনের বাসটি ঢাকা- মাওয়া এক্সপ্রেসওয়ের শ্রীনগরে দূর্ঘটনায় কবলিত হয়। এসময় সংগঠনের যশোর সদরের নওয়াপাড়া ইউনিয়ন সভাপতিসহ ৭ জন নিহত হয়। যাদের ৬ জনের বাড়ি এই ইউনিয়নের আড়পাড়া, মধুগ্রাম ও ঘুরলিয়া গ্রামে। এ ঘটনায় এই তিন গ্রামের আরো ১২/১৪ জন আহত ঢাকার বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিসাধীন আছেন। যাদের ১০ জনের অবস্থা আশংকাজনক বলে চিকিৎসকরা জানিয়েছেন। নিহতরা হলেন, যশোরের নওয়াপাড়া ইউনিয়নের আড়পাড়া গ্রামের বজলুর রহমানের ছেলে মুজাহিদ জিল্লুর রহমান (৬৫), নওয়াপাড়া ইউনিয়নের  ইসলামী আন্দোলনের সভাপতি  ও ঘুরুলিয়া গ্রামের ডাক্তার আব্দুল জলিল (৬৫), একই গ্রামের ডাক্তার আব্দুল হালিম (৫৫), ইসলামী আন্দোলন যশোর জেলা দায়িত্বশীল মধুগ্রামের মাওঃ মোস্তফা(৩৪) , মুফতি আব্দুর রহমান (৫২) ও মুফতি আবু বকর (৪৩) । এই দূর্ঘটনায় মধুগ্রামের আব্দুল জব্বার, ইশারত আলী, আড়পাড়া গ্রামের মাওলানা মোক্তার আলী, ঘুরুলিয়া গ্রামের বরকত হোসেন, কেরামত আলী, পাগলাদহ গ্রামের লিয়াকত  আলী, সেলিম হোসেনসহ ১০/১২ জন আহত হয়েছে। এদের মধ্যে বেশ কয়েকজনের অবস্থা আশংকাজনক। মুন্সীগঞ্জ ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের উপ-সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ সফিকুল ইসলাম জানান, যশোর থেকে ঢাকাগামী হামদান এক্সপ্রেস পরিবহনের নাইটকোচটি একটি ট্রাকের পেছনে সজোরে ধাক্কা মারে। সংঘর্ষের পর উভয় যানবাহন নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে এক্সপ্রেসওয়ের সড়ক দ্বীপের রেলিংয়ের সঙ্গে আলাদাভাবে ধাক্কা খেয়ে রাস্তার ওপর আচড়ে পড়ে। তিনি আরও জানান, ঘটনাস্থলেই বাসের ৪ যাত্রী মারা যান। পরে হাসপাতালে ভর্তির পর মারা যান আরো ৩ জন। যাদের মধ্যে ৬ জনের বাড়ি যশোরে ও ১ জনের বাড়ি মুন্সিগঞ্জে। দূর্ঘটনার পরপরই বাস ও ট্রাকের দুই চালক পালিয়ে যায়। এদিকে গতকাল শনিবার দূর্ঘটনার খবর ছড়িয়ে পড়লে নিহত ও আহতদের বাড়িতে নেমে আসে শোকের ছায়া। গত শনিবার দুপুরের দিকে সরেজমিনে ঘুরুলিয়া, আড়পাড়া ও মধুগ্রামে গিয়ে চোখে পড়ে এক নিদারুন শোকের পরিবেশ। স্বজনহারাদের বুকফাঁটা আর্তনাদে এলাকার বাতাস ভারি হয়ে ওঠে। শোক সন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের শান্তনা দিতে সংগঠনের নেতৃবৃন্দ ছাড়াও স্থানীয় এলাকাবাসী ও বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ ছুটে যান হতাহতদের বাড়িতে। তারা নানা ভাবে শান্তনা দেওয়ার চেষ্টা করেন। কিন্তু কোন শান্তনাই হতাহতদের পরিবারের আহাজারি থামাতে পারছে না।