স্টাফ রিপোর্টার ॥ সুন্দরবন পশ্চিম বন বিভাগের সাতক্ষীরা রেঞ্জে কৈখালী ফরেস্ট স্টেশনে জেলেদের কাছ থেকে বাড়তি টাকা আদায় সহ নানা অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে স্টেশন কর্মকর্তা সুলতান আহমেদের বিরুদ্ধে। এ টাকা আদায়ের জন্য একটি শক্তিশালী দালাল সিন্ডিকেট নিয়ন্ত্রনের অভিযোগসহ নিষিদ্ধ রেনু ও পারসে পোনা ধরা এবং বনদস্যুদলের সাথে যোগসাজোসসহ মাদক পাচারে সহযোগিতা করারও অভিযোগ আছে তার বিরুদ্ধে।
অনুসন্ধানে জানা যায়, সুন্দরবনে মাছ কাঁকড়া আহরনের সাথে সাথে এখন মধু সংগ্রহের পাসও দেওয়া হচ্ছে বন বিভাগ থেকে। কিন্তু সকল নিয়মের বেড়াজাল ভেদ করে নিজের ইচ্ছামতো চুক্তি করে হরিণ শিকার, গোলপাতা, গরান, সুন্দরী গাছ নিধন, মাদক ও গরু পাচার সহ একাধিক অপকর্মে জড়িত হয়ে পড়েছে সুন্দরবন পশ্চিম বন বিভাগের সাতক্ষীরা রেঞ্জের কৈখালী ফরেস্ট কর্মকর্তা সুলতান আহমেদ।
বর্তমানে কৈখালী স্টেশনে কর্মকর্তা সুলতান আহমেদ সুন্দরবনে মাছ ধরতে যাওয়া জেলেদের কাছ থেকে জেলে প্রতি সরকারি ফি ২০০টাকার স্থলে এক হাজার থেকে ১২০০টাকা অতিরিক্ত আদায় করছেন বলে অভিযেগ করেছে জেলেরা। এর আগে বিএলসি নাবায়নের সময় সরকার নির্ধারিত রাজস্ব থেকে অতিরিক্ত অর্থ আদায় করছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। প্রতিটি বিএলসির বিপরীতে নৌকা ভেদে নেওয়া হয়েছে দেড় হাজার থেকে তিন হাজার টাকা পর্যন্ত। তবে এ টাকা আদায়ের জন্য একটি শক্তিশালী সিন্ডিকেট গ্রুপ তৈরি করার অভিযোগ আছে তার বিরুদ্ধে। তার সিন্ডিকেটের সদস্যদের মধ্যে আছে ড্রাইভার বুলবুল, শহিদুল, খোকন, মহসিন, আরাফাত, মোমিনুর সহ অনেকে যাদের প্রত্যেকের আয় মাসে দেড় থেকে দুই লক্ষ টাকা পর্যন্ত। শত শত জেলে তাদের সিন্ডিকেটের কাছে ধরা। জেলেরা কৈখালী স্টেশনে তাদের পারমিট নিতে গেলে বাইরে দাঁড় করিয়ে রাখা হয়। দালাল ছাড়া কোন জেলে পাশ পারমিট নিতে পারে না। এছাড়াও অনেক সময় এসব দালাল একই পাশ বার বার জেলেদের হাতে দিয়ে সুন্দরবনে মাছ ধরতে পাঠায়। ফলে জেলেরা বনে গিয়ে অনেক সময় বন বিভাগের হাতে আটক হয়ে জরিমানা গুনতে বাধ্য হয়।
এব্যাপারে প্রতিবাদ করলে সুলতান আহমেদ কর্তৃক বনদস্যু দিয়ে সায়েস্তা করার অভিযোগ করেন ভুক্তভোগী জেলেরা। অন্যদিকে চোরা শিকারিদের সাথে গোপনে মোটা অঙ্কের টাকার চুক্তিতে হরিণ শিকার করতে অনুমতি দেওয়ার অভিযোগ আছে সুলতান আহমেদের বিরুদ্ধে। বনের গোলপাতা, গরান, সুন্দরীসহ বিভিন্ন ধরনের গাছ বিক্রির অভিযোগও দীর্ঘদিনের। কৈখালীর বিভিন্ন পয়েন্ট থেকে নিষিদ্ধ রেনু ও পারসে পোনা ধরার অনুমতিও তার কাছ থেকে নেওয়া যায়। অন্যদিকে কৈখালীর বিভিন্ন পয়েন্ট দিয়ে মাদক ও গরু চোরাচালান হয় যার ভাগ পায় সুলতান আহমেদ। ভারতে বসবাসকারী আকাশ বাহিনী প্রধান বনদস্যু আব্দুল আলীমের সাথে সুলতান আহমেদ আতাত করে চলেন বলে জেলেদের মারফত জানা যায়। স্টেশন কর্মকর্তার অপসারণ দাবী করে এলাকার সচেতন মহল বন ও পরিবেশ উপদেষ্টার হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।