ঝুলে থাকা ১২৭টি রাস্তার কাজ শেষ করে প্রশংসায় ভাসছেন নির্বাহী প্রকৌশলী কামরুজ্জামান – দৈনিক সাতক্ষীরা সংবাদ

ঝুলে থাকা ১২৭টি রাস্তার কাজ শেষ করে প্রশংসায় ভাসছেন নির্বাহী প্রকৌশলী কামরুজ্জামান

লেখক/প্রতিবেদকঃ SatkhiraSangbad
প্রকাশঃ মে ২৬, ২০২৫

শেষ হয়েছে ১২৭টি ঝুলে থাকা রাস্তার কাজ;
ঠিকাদারদের জরিমানা করা হয়েছে ২ কোটি টাকা;
সুফল ভোগকরছে সাধারণ মানুষ;

আহাদুর রহমান জনি॥ দীর্ঘদিন ধরে ঝুলে থাকা গ্রামীণ সড়কের নির্ম্যাণ ও সংস্কার কাজ ধীরে ধীরে সম্পন্ন হচ্ছে। ২০১৭ সালে টেন্ডার হওয়া সড়কসহ বিভিন্ন উন্নয়ন কাজ নানা অযুহাতে ঝুলিয়ে রাখে ঠিকাদাররা। কিন্তু সাতক্ষীরা স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. কামরুজ্জামানের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় টেন্ডার হওয়ার পরু দীর্ঘ ৮বছর ঝুলে থাকা কাজ গুলো সম্পন্ন হচ্ছে। ফলে সাধারণ মানুষের প্রশংসায় ভাসছেন তিনি।
সাতক্ষীরা স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরে সূত্র মতে, ২০১৭-১৮, ১৮-১৯, ১৯-২০, ২০-২১, ২১-২২ অর্থবছরের প্রায় ১২৭টি সংস্কার ও উন্নয়ন প্রকল্পের টেন্ডার প্রক্রিয়া শেষে কার্যাদেশ দেওয়া হলেও ঠিকাদারদের গাফেলতিতে ঝুলে ছিলো। ফলে সাতক্ষীরা জেলার সাতটি উপজেলার ২২লক্ষ মানুষ ভোগান্তিতে পরে। তবে দৃশ্যপট পাল্টে যেতে থাকে নির্বাহী প্রকৌশলী মো. কামরুজ্জামানের যোগদানের পর। ২০২৩ সালের ৭ আগস্ট তিনি সাতক্ষীরায় যোগদানের পর থেকে নতুন প্রকল্পের কাজ শুরু করার সাথে সাথে তিনি নজর দেন দীর্ঘদিন ধরে ঝুলে থাকা অবহেলিত উন্নয়ন প্রকল্পগুলোর দিকে। যেগুলো শুধুমাত্র ঠিকাদারের গাফেলতিতে পরিত্যাক্ত ছিলো। নির্বাহী প্রকৌশলী মো. কামরুজ্জামান যোগদানের পর অত্যন্ত বিচক্ষণতার সাথে প্রথমেই দীর্ঘদিন ধরে ঝুলে থাকা কাজ গুলোকে খুঁজে বের করেন। যোগাযোগ করেন ঠিকাদারদের সাথে। তাদের দ্রুত কাজ শেষ করার আল্টিমেটাম দেন।
তথ্যানুসন্ধানে জানা যায়, বিগত আট বছর ধরে ১২৭টি সংষ্কার ও উন্নয়ন প্রকল্পের কাজ ঝুলে থাকে। এরপর নির্বাহী প্রকৌশলী যোগদান করে ঠিকাদারদের কাজগুলো শেষ করতে বাধ্য করেন। অসমাপ্ত ১২৭টি কাজের মধ্যে ইতোমধ্যেই ৭৫টি সংস্কার ও উন্নয়ন প্রকল্প শেষ হয়েছে। এসবের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো, ২০১৮ সালের তালায় এমএম ব্রাদার্সের কাজ, সদরে সুইফট ট্রেডার্সের কাজ, সাতানী কলেজের রাস্তার কাজ, গোবরদাড়ি রাস্তার কাজ, কালিগঞ্জের নলতার পালপাড়ার কাজ, শ্যামনগরের চিংড়িখালী রাস্তার কাজ, আশাশুনির বামনডাঙ্গা রাস্তার কাজ, ২০২১ সালের কলারোয়ার বেলতলা রাস্তার কাজ। দ্রুত কাজ এগিয়ে চলছে আরও বেশ কিছু কাজের। ইতোমধ্যেই কিছু কাজ বাতিল হওয়া ছাড়াও ঠিকাদারদের কাছ থেকে জরিমানা আদায় করা হয়েছে ২ কোটি টাকা। যা সরকারি কোষাগারে জমা হয়েছে। সার্টিফিকেট মামলা হয়েছে আরও একটি।
শ্যামনগরের চিংড়িখালীর বাসিন্দা মালেক জানান, দীর্ঘদিন ধরে ভাংঙা রাস্তায় চলতে অনেক কষ্ট ও ক্ষতির মুখে পড়তে হয়েছে। কিন্তু এতদিন পর হঠাৎ ঠিকাদার আবারও কাজ শুরু করে। অবশেষে ভাঙা রাস্তা থেকে নিস্তার পেয়েছি আমরা।
বামনডাঙ্গা এলাকার আব্দুর রহিম বলেন, খানাখন্দে ভরা রাস্তা চলতে খুব ভোগান্তিতে পড়তে হতো। রাস্তাটি সংস্কার হওয়ার পর অবশেষে ভোগান্তি থেকে মুক্তি পেয়েছি। একই মন্তব্য করেন সদর উপজেলার সাতানির জব্বার মোড়ল। তিনি জানান রাস্তা ভালো না থাকায় আমরা সাধারণত কলেজরোড এড়িয়ে চলতাম। রাস্তা সংস্কারের পর চিত্র পাল্টেছে। ফলে প্রশংসার দাবী রাখে সাতক্ষীরা এলজিইডির কর্মকর্তারা।
এসব বিষয়ে কথা হলে সাতক্ষীরা স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. কামরুজ্জামানের সাথে কথা হলে তিনি জানান, ‘সাতক্ষীরায় এসেই দেখতে পাই কার্যাদেশ দেওয়ার পরও ১২৭টি রাস্তা সংষ্কার ও নির্মাণের কাজ দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ আছে। ফলে জনগণের ভোগান্তি চরমে পৌছে। সাধারণ মানুষের ভোগান্তির কথা মাথায় নিয়ে ঠিকাদারদের কাজ করতে বাধ্য করি। তারপরও যারা কাজ করতে চায়নি তাদের বিরুদ্ধে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। তিনি আরও জানান, সাধারণ মানুষের ভোগান্তি লাঘবে যা করা যায় ুআমি তাই চেষ্টা করেছি।