স্টাফ রিপোর্টার: সাতক্ষীরা জেলা সিভিল সার্জন ডাঃ আব্দুস সালামের বিরুদ্ধে মদ্যপান সহ নারী কেলেংকারীর অভিযোগ উঠেছে। তার বাসার কাজের আয়ারা বাদ পড়েনি তার বদ নজর থেকে। ইতোপূর্বে আয়া রেক্সনা তার ইচ্ছে মতো চলতে না পারায় তাকে শ্যামনগর বদলী করেন। সিভিল সার্জন অফিসের আউট সোর্সিং পদে ৮ বৎসর চাকুরী করেন আম্বিয়া খাতুন। তাকে বিগত ৬ মাস পূর্বে সিভিল সার্জন অফিস থেকে কৌশলে সিভিল সার্জনের বাসায় দায়িত্ব দেওয়া হয়। তার কুপ্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় সিভিল সার্জন মদ্যপান করে আকস্মিক ঘরের দরজা বন্ধ করে তাকে শ্লীলতাহানী করে। সুকৌশলে ঘর থেকে বের হয়ে কাঁদতে কাঁদতে চলে আসে সে। সিভিল সার্জন ডাঃ আব্দুস সালাম নিয়মিত মদ্যপান সহ তার বিরুদ্ধে নারীদের কেলেংকারীর অভিযোগে অভিযুক্ত করে স্বাস্থ্য উপদেষ্টা বরাবর লিখিত অভিযোগ প্রেরণ করা হয়েছে।
ঘটনার বিবরণে প্রকাশ, সিভিল সার্জন সাতক্ষীরা অফিসের আউট সোসিং কর্মচারী আম্বিয়া খাতুন (৩৮) স্বামী মোঃ আলমগীর হোসেন, সাং-কামালনগর দক্ষিণপাড়া, থানা ও জেলা সাতক্ষীরা স্বাস্থ্য উপদেষ্টা বরাবর গত ১৬/০৩/২০২৫ তারিখে সিভিল সার্জন সাতক্ষীরা মোঃ আব্দুস সালাম এর বিরুদ্ধে মদ্যপান করে ঘরের দরজা লাগিয়ে শ্লীলতাহানী ঘটানোর অভিযোগে অভিযুক্ত করে স্বাস্থ্য উপদেষ্টা বরাবর লিখিত অভিযোগ প্রেরন করেছেন। লিখিত অভিযোগে আম্বিয়া খাতুন উল্লেখ করেন যে, বিগত ৮ বছর পূর্বে আউট সোসিং এর মাধ্যমে নিয়োগপ্রাপ্ত হয়ে সিভিল সার্জন অফিসে আয়া হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন। বিগত ৬ মাস পূর্বে সিভিল সার্জন ডাঃ আব্দুস সালামের বাসায় কাজের আয়া হিসাবে রবিউল ইসলামের স্ত্রী রেক্সনা খাতুন দায়িত্ব পালন করত। তাকে সিভিল সার্জন শ্যামনগর বদলী করিয়া দেন। তাকে বদলী করে দিয়ে সিভিল সার্জন অফিস থেকে আয়া আম্বিয়া খাতুন কে তার বাসায় রান্না করার কাজ সহ ঘরের সমস্ত কাজ করতে আদেশ দেন। গত ৬ মাস সিভিল সার্জনের বাস ভবনে রান্না সহ যাবতীয় কাজ সম্পাদন করেন। কিন্তু প্রতিনিয়ত সিভিল সার্জন ডাঃ আব্দুস সালাম আয়া আম্বিয়াকে বোরকা ও হিজাব খুলে তার বাসায় কাজ করতে বলে এবং খারাপ ইঙ্গিত সূচক তার সাথে রাত কাটাতে বলে। সে রাজী না হওয়ায় একদিন ঘরে ডেকে জোর পূর্বক দরজা আটকিয়ে তার শ্লীলতাহানী করে। কান্না করতে করতে বাসা থেকে বাহির হয়ে আসে আম্বিয়া। লিখিত অভিযোগ আরও উল্লেখ্য করেন, সিভিল সার্জন নিয়মিত মদ্যপান করে নারী কেলেংকারীর সাথে যুক্ত থাকেন।
সিভিল সার্জনের বাসায় পূর্বে আয়া হিসাবে ১০/১২ বছর আয়া হিসাবে কাজ করতেন যাকে শ্যামনগর বদলী করা হয়েছে। এ প্রতিবেদক রেক্সনা খাতুনের সাথে মোবাইল ফোনে তার বদলীর কারণ জানতে চাইলে তিনি জানান, ৫/৬ টি সিভিল সার্জন পার করেছি। সিভিল সার্জনের বাসায় রান্না সহ যাবতীয় কাজ করেছি। সেই সব সিভিল সার্জন কত সম্মানী মানুষ আর বর্তমান সিভিল সার্জন ডাঃ আব্দুস সালাম তাকে খারাপ কাজ করার ইশারায় ইঙ্গিত কুপ্রস্তাব দিত। তার কুপ্রস্তাবে রাজী না হওয়ায় তাকে শ্যামনগর বদলী করে দিয়ে আম্বিয়াকে বাসায় কাজের জন্য নেয়। শুনেছি তার সাথেও মারাতœক অপরাধ করেছে যা মুখে বলা বলা যাবে না। বর্তমান সিভিল সার্জন মতন ইতিপূর্বে এমন অসৎ অফিসার কখনও দেখিনি। আম্বিয়া সিভিল সার্জনের বিচার দাবি করেছে। আম্বিয়া এ প্রতিবেদককে আরও জানায়, সিভিল সার্জনের কথা মত চলতে না পারায় তাকে গত বৃহস্পতিবার আশাশুনি হাসপাতালে মৌখিক বদলী করে দেন। আম্বিয়া আরও জানান, সিভিল সার্জনের বিরুদ্ধে এসকল ঘটনা উল্লেখ করে স্বাস্থ্য উপদেষ্টা বরাবর লিখিত অভিযোগ করছি। কিন্তু অভিযোগ প্রেরনের পর গত কাল ১৯/০৩/২৫ তারিখ সুকৌশলে ডাঃ জয়ন্ত কুমার সরকার এম.ও সিভিল সার্জন অফিস অভিযোগকারী আম্বিয়াকে ডেকে এনে বুঝিয়ে আশাশুনি থেকে সাতক্ষীরায় যে কোন স্থান ফিরিয়ে এনে দিবে অভিযোগ প্রত্যাহার করেন মর্মে সাদা কাগজে ২ লাইনে লিখে তার স্বাক্ষর গ্রহন করেন। কিন্তু আয়া আম্বিয়া খাতুন স্বাক্ষর নেওয়ার পরপরই ডাঃ জয়ন্ত সরকার কে জানিয়ে দেন যে দরখাস্ত প্রতাহার করবেন না। তার স্বাক্ষর করা কাগজ কোথাও জমা না দেওয়ার জন্য বলেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সদর হাসপাতালের সাবেক কয়েকজন কর্মচারী জানান, সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে বর্তমান সিভিল সার্জন ডাঃ আব্দুস সালাম আর এম ও থাকাকালীন নারী কেলেংকারীর সাথে জড়িত ছিলেন। এবিষয়ে সাতক্ষীরা সিভিল সার্জন অফিসের মেডিকেল অফিসার ডাঃ জয়ন্ত কুমার সরকারের কাছে মোবাইল ফোন এ প্রতিবেদক জানতে চাইলে তিনি জানান, এবিষয়ে আপনি সিভিল সার্জন স্যারের সাথে কথা বলেন। অভিযুক্ত সিভিল সার্জন সাতক্ষীরা ডাঃ আব্দুস সালাম এর সাথে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, ‘ঘটনাটি সত্য নয়। আমাকে ফাঁসানোর জন্য একটি চক্র কুৎসা রটাচ্ছে।
উল্লেখ্য, একই ধরনের আরো ভয়ংকর অভিযোগ আছে স্বাস্থ্য কম্পেøক্সের এক কর্মকর্তার বিরুদ্ধে। যা নিয়ে অনুসন্ধান চলছে।